
নিজস্ব প্রতিবেদক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনুস ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক দ্রুত অবনতির দিকে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে দেশের পাসপোর্ট গ্রহণযোগ্যতায়। বিশ্বব্যাপী ভিসা নিষেধাজ্ঞা কঠোর হওয়ায় বাংলাদেশি পাসপোর্টের মূল্য ভয়াবহভাবে কমে গেছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের ২০২৫ সালের গ্লোবাল পাসপোর্ট সূচকে ১০৬ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১০০তম, যা বিশ্বের সপ্তম দুর্বলতম পাসপোর্ট হিসেবে চিহ্নিত। কয়েক বছর আগেও বাংলাদেশের অবস্থান তুলনামূলকভাবে উঁচু ছিল, কিন্তু সাম্প্রতিক কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতা ও আন্তর্জাতিক অনাস্থা পরিস্থিতি পুরোপুরি পাল্টে দিয়েছে।
অভিবাসন বিশ্লেষকদের মতে, ড. ইউনুস সরকারের সময় বিদেশনীতি ও কূটনৈতিক কৌশলে মারাত্মক দুর্বলতা দেখা দিয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন, অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীলতা এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি বাংলাদেশের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। উন্নত ও উন্নয়নশীল অনেক দেশ এখন বাংলাদেশিদের ভিসা দিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে।
একইসঙ্গে অবৈধ অভিবাসন, ভিসার অপব্যবহার এবং বিদেশে কিছু বাংলাদেশির অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। অনেক দেশ অভিযোগ করছে, বাংলাদেশি নাগরিকরা পর্যটন ভিসা নিয়ে গিয়ে অবৈধভাবে কাজ করেন বা তৃতীয় দেশে প্রবেশের জন্য ট্রানজিট রুট ব্যবহার করেন।
সাবেক কূটনীতিক মুন্সী ফয়েজ আহমদ বলেন, “বিদেশে কিছু নাগরিকের অসদাচরণ ও সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতা বাংলাদেশের প্রতি আস্থা কমিয়েছে। একসময় যেসব দেশে ভিসা ছাড়াই যাওয়া যেত, এখন সেসব দেশেও ভিসা বাধ্যতামূলক হয়েছে। এমনকি ভিসা নিয়েও বাংলাদেশিদের বিমানবন্দরে অপমানজনক জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশির মুখে পড়তে হচ্ছে, শুধুমাত্র পাসপোর্টের পরিচয়ের কারণেই।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান সরকারের উচিত দ্রুত কার্যকর কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করা এবং আন্তর্জাতিক আস্থার সংকট দূর করা। অন্যথায় বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য বৈশ্বিক চলাচল আরও সীমিত হয়ে পড়বে, যা দেশের অর্থনীতি ও বৈদেশিক সম্পর্কের ওপর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।